চানাওয়ালাটা ঠিক চারটে বাজলেই দত্তদের বাড়ির সামনে দিয়ে হেঁকে যায় , “চানা লিবে গো গরম চানা” । দত্তদের বছর দশেকের মেয়ে রোশনি অপেক্ষা করে থাকে এই মুহূর্তটার জন্যই। সে ছুটে এসে অমনি বলবে, “ দেখি দু’টাকার চানা”।
রোশনি রোজ দ্যাখে ও যখন চানা কেনে তখন ওর বয়সীই সামনের বস্তির একটা ছেলে জুলজুল করে তাকিয়ে থাকে দূর থেকে তবে কোনদিন সামনে এসে চায়নি। রোশনির খুব কষ্ট হয় এদের জন্য। মনে মনে ভাবে — আহারে! কত কষ্ট এদের। সামান্য দুটাকার চানাও কিনে খেতে পারেনা।অথচ তারা……।
আজ রোশনি চানা কেনার আগে আড়চোখে একবার দেখে নিয়েছে ছেলেটাকে, তারপর দুটো ঠোঙা চানা কিনেছে। কেনার পর এগিয়ে যায় ছেলেটার দিকে। একটা ঠোঙা বাড়িয়ে মিষ্টি হেসে বলে, “নাও”।ছেলেটা মুখে কিছু বলে না। শুধু ঘাড় নেড়ে জানায় সে নেবে না। এবার রোশনি খানিকটা জোর করে বলে, “ আমি বলছি নাও, নাহলে দুঃখ পাব”। এবার ছেলেটা কিছুটা দ্বিধাগ্রস্ত-ভাবে হাত বাড়িয়ে চানার ঠোঙাটা নিয়ে উল্টোদিকে ফিরে দে দৌড়।
মাঝে কেটে গেছে কয়েকমাস। আজও রোশনি রোজ ওই চানাওয়ালার কাছ থেকেই চানা কিনে খায়।কিন্তু, আর কোনদিন দ্যাখা যায়নি ওই ছেলেটাকে।